এটা দুজনের অমর প্রেমকাহীনি। এটা একটা সত্য ভালবাসার গল্প । গল্পটা শুভ আর নীলার সাহসী কাছে আসার গল্প। গল্পটা শব্দে বর্ননাযোগ্য নয়, তাও আমার ব্যার্থ প্রয়াস।
সাল, ২০১৩। শুভ ও নীলার কলেজ শুরু হচ্ছে আজ থেকে । কলেজে আজ প্রথম নীলার সাথে দেখা হল শুভর।
নীলাকে দেখে শুভর খুব পছন্দ হয়ে গেল। যাকে বলে "লাভ এ্যাট ফাস্ট সাইট"। আস্তে আস্তে নীলার প্রতি শুভর ভালবাসা আরো গাঢ় হতে থাকল।
নীলার কথা ওর হাসি সবই শুভর খুব ভাল লাগতো। নীলাও তাঁ বুঝতে পাড়তো। আস্তে আস্তে নীলাও শুভকে ভালবেসে ফেলল।
কিন্তু নীলা তা প্রকাশ করতে ভয় পেতো । কারন ওদের ধর্ম ভিন্ন। সবকিছু বিচার করে নীলা ওর ভালবাসা, মনের মধ্যে চেপে রাখার সিদ্ধান্ত নিল।
দিনটা ১৪ই ফেব্রুয়ারি,২০১৪ ভালবাসা দিবস। শুভ ঠিক করল ও নীলাকে সব বলবে। বলবে ওর মনে নীলার অবস্থানের কথা। বলবে ওর ভালবাসার কথা। বলেও ফেলল সে ।
ওর প্রস্তাবে নীলা আর না বলতে পাড়লোনা। হ্যাঁ বলে দিল ও। ভালবাসতে-বাসতে কবে যে ওরা এত কাছে চলে এলো তাঁ ওরা নিজেরাও বুঝতে পাড়লোনা।
ওদের ভালবাসার কথা বেশি দিন ওদের পরিবারের কাছে অজনা থাকলোনা। নীলার বাবা জেনে ফেলল সব। মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে সব হয়তো মেনেও নিতো।
কিন্তু ধর্মের ব্যবধানে তাঁ আর হয়ে উঠলো না। নীলাকে নিষেধ করে দিল সে, শুভর সাথে মেলামেশা করতে। স্বাভাবত বাধ্য মেয়ে নীলা ওর বাবার কথা শুনলোনা।
দেখতে দেখতে, এক বছড় পেড়িয়ে গেল।
এর মধ্যে নীলার বিয়ের কথাও ঠিক হয়ে গেছে । ১৩ ই ফেব্রুয়ারি,২০১৫ নীলার বিয়ের ঠিক আগের দিন ওরা পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিল।
শুভ নীলাকে আসতে বললো শাহাবাগ রোডের পাশে, কাজী অফিসে। দেশে তখন রাজনৈতিক অসহিংসতা চলছে। আসার পথে নীলার গায়ে এসে পড়লো এক পেট্রোল বোমা। নির্মম ভাবে পুড়ে গেল ওদের সম্পূর্ন দেহটা। এক দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে আবশেষে জ্ঞান ফিরে পেলো নীলা।
আয়নায় নিজের চেহারা দেখে আঁতকে উঠলো সে। নিজেকে যেন অজানা লাগছিলো। সে ভাবলো এ চেহারাই শুভ হয়তো তাকে গ্রহন করবে না।
কিন্তু ওদের ভালবাসা তো শারিরিক নয়। ওদের ভালবাসা তো মনের। সত্য ভালবাসা, যাতে কোন লালসা নেই, নেই কোন চেহারার মূল্য।
অবশেষে ভালবাসা দিবসে শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে, হাসপাতালেই শুভ বিয়ে করলো নীলাকে। সাহসী এই সিদ্ধান্ত সারাজীবনের মতো কাছে নিয়ে এলো দুজনকে
No comments:
Post a Comment